স্বদেশ ডেস্ক: পারিবারিক বিরোধের জের ধরে ২০০৯ সালের ১১ই এপ্রিল চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেড থানাধীন মাইলের মাথা এলাকায় খুন হন এরশাদ (২২) নামের এক যুবক। এই ঘটনায় জড়িত এরশাদের কয়েকজন প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে সাক্ষ্য দেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় লায়লা বেগমসহ আরও কয়েকজন। এই ঘটনায় বেশকিছু দিন কারাগারে থাকার পর জামিনে বের হয়ে এরশাদের খুনিরা এই বছরের প্রথম দিন সকালে লায়লা বেগম ও আরেক সাক্ষী ওমর ফারুককে তাদের বাড়িতে এসে কুপিয়ে জখম করে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে লায়লা বেগমের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় জড়িত মোহাম্মদ ইরান নামে একজনকে আটক করেছে র?্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। ইরান র্যাব’র কাছে লায়লা বেগমের ওপর বর্বরোচিত হামলার বিষয় স্বীকার করেন। র্যাব-৭ এর একটি চৌকস দল প্রযুক্তি ব্যবহার করে ১১ই জানুয়ারি রাতে মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানাধীন ইছাখালী ইকোনমিক জোন এলাকার ভাবীর মোড় এলাকা হতে মোহাম্মদ ইরানকে আটক করে। তবে বাকি আসামিরা পলাতক আছেন।
ঘাতক ইরান ইপিজেড থানাধীন মহব্বত মুন্সীর বাড়ির আবুল বশরের পুত্র। সে উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে উক্ত হত্যার ঘটনা অপকটে স্বীকার করে। তার বিরুদ্ধে আগে থেকে ২টি হত্যাসহ মোট ০৪ টি মামলা রয়েছে। র্যাব সূত্রে জানা যায়, ২ বছর আগে ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল এরশাদ (২২) তার কর্মস্থল হতে ফেরার পথে ২নং মাইলের মাথা জনৈক মহিউদ্দিনের গ্যারেজের সামনে দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। এই ঘটনায় তার প্রতিবেশী মোহাম্মদ আরমান (৩৫), ইরান (৩৩) এবং ইমতিয়াজ (৩২) জড়িত ছিল। আসামিদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষদর্শী কবির আহম্মেদ (৬৫), তার ছেলে ওমর ফারুক (৩১) ও লায়লা বেগম (৪০) সাক্ষ্য দেন। উক্ত হত্যা মামলায় আসামি ইরানসহ অন্যরা বিভিন্ন মেয়াদে জেল খেটে পরবর্তীতে জামিনে বের হয়ে আসে। জামিনে বের হয়ে আসার পর আসামিরা এরশাদ হত্যা মামলার সাক্ষ্য প্রদান না করার জন্য সাক্ষীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল।
একপর্যায়ে এই ২০২২ সালের ১লা জানুয়ারি সকালে আসামিরা অতর্কিতভাবে এসে লোহার শাবল, বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে সাক্ষী লায়লা বেগম ও ওমর ফারুককে গুরুতর জখম করে। তখন আসামিরা প্রকাশ্যে বলে, তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিলে সবার একই অবস্থা হবে। মুমূর্ষু অবস্থায় লায়লাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৬ই জানুয়ারি বিকাল ৩ টায় মারা যায়। ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক ছিল।
এই বিষয়ে র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমএ ইউসুফ বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানার মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।